Skip to content

বুলেটপ্রুফ এর নতুন প্রজন্ম

ধরুনএকটা গুলি আপনার দিকে ছুটে আসছে । কি করবেন আপনি? আপনি হয়ত ধরেই নিবেন যে গুলিটি আপনার বুকে ঢুকে যাবে ।

আপনি মারা যাবেন । এতদিন আমরা সেটাই জানতাম যে গুলি লাগলে মানুষ মারা যায়। কিন্তু এরপর থেকে হয়ত কিছু কিছু মানুষ বেঁচেও যাবে। হ্যাঁ, ঠিকই বলছি। আর এতে ডাক্তারও লাগবেনা, নিজেই বেঁচে যাবে।কিভাবে?বলছি।
বন্দুকের গুলি থেকে বাঁচার জন্য অনেক আগে থেকেই বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট বা এই জাতীয় অন্য কোন কিছু আমরা ব্যবহার করে আসছি। কিন্তু বিজ্ঞানীদের মনে নতুন এক প্রশ্ন আসল এই যে যদি এমন কোন কিছু বানানো যায় যাতে করে সাধারণভাবে দেখে বোঝা যাবে না যে আমাদের শরীরে বুলেটপ্রুফ জাতীয় কিছু আছে, তাহলে অনেক সময় অনেক মারাত্বক অবস্থা থেকেও আমরা রক্ষা পেতে পারব। এই চিন্তাকে সূত্র ধরে বিজ্ঞানীরা এটা নিয়ে কাজ শুরু করে অবশেষে আশানুরূপ এক প্রকার বুলেটপ্রুফ স্কিন তৈরি করার চেষ্টা করছে যা গুলিটিকে আমাদের শরীরে ঢুকতে বাঁধা দিবে। কয়েকজন ডাচ বিজ্ঞানী এটা নিয়ে কাজ করছেন। তারা এক প্রকার বুলেটপ্রুফ স্কিন তৈরি করছেন যা মানুষের স্কিনের মতই দেখতে। অর্থাৎ দূর থেকে দেখে বোঝা যাবে না যে এটা কৃত্তিম ভাবে বানানো। এটা শরীরের সাথে লাগানো থাকবে। ফলে গুলি বা গুলি জাতীয় অন্য কিছু শরীরে ঢুকতে পারবে না।
এখন আসি কিভাবে এটা বানানো হয়েছে এই কথায়। বিজ্ঞানীরা জৈবিক উপায়ে এটা বানানোর চেষ্টা করেছেন। ছাগলের দুধ থেকে বুলেটপ্রুফ ম্যাটেরিয়াল বানিয়েছেন। সাধারণ ছাগল না কিন্তু। এসব ছাগল বায়োটেকনোলজির সাহায্যে একটু উন্নত করা হয়েছে উন্নত প্রোটিন পেতে। তার কারণ হল সাধারণ দুধে ল্যাকটোজ থাকে, প্রোটিন থাকে।

কিন্তু উন্নত এই ছাগলের দুধ থেকে যে প্রোটিন পাওয়া যায় তাতে এমন এক প্রকার পদার্থ থাকে যা মাকড়শার রেশমে থাকে কিন্তু সাধারণ দুধে থাকে না। আমরা জানি রেশম খুবই উপকারি কারণ রেশমের থেকে সুতা জাতীয় যে পদার্থ পাই তা একটু শক্ত আর অনেক স্ট্রেন্থ দেয়। এরপর দুধ থেকে প্রাপ্ত এই রেশমের গুণ সম্মৃদ্ধ প্রোটিন দিয়ে বুলেটপ্রুফ স্কিনের একটা লেয়ার বানানো হয়। প্রথমে বিজ্ঞানীরা ধারণা করে যে এই লেয়ার মানুষের শরীরে থাকা কেরাটিনের কাজ করবে। ( বলে রাখা ভালো যে কেরাটিন হল মানুষের কোষের উপরের স্তরে থাকা এক প্রকার পদার্থ যা বাইরের আঘাত থেকে আমাদের কোষকে রক্ষা করে। এই স্তরে কেরাটিনের অনেকগুলা স্তর একসাথে থাকে যাতে করে অনেক স্ট্রেন্থ পাওয়া যায়।) পরে বিজ্ঞানীরা এতে সফল হয়। এই লেয়ার একটার পর একটা দিয়ে সামান্য পুরু স্তরের বুলেটপ্রুফ স্কিন তৈরি করে।

কিন্তু যেহেতু সবকিছুর ভাল খারাপ ২ দিকই আছে তাই এটারও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেহেতু স্কিনের লেয়ারটা খুবই কম পুরু তাই অনেক জোরে আসা গুলিকে এটা আটকাতে পারবে না। বিজ্ঞানীরা একটা সর্বোচ্চ বেগ ( ০.২২ ক্যালিবার পিস্তলের গুলি) নির্ধারণ করে দিয়েছেন যার বেশি বেগের গুলি এই স্কিন আটকাতে পারবেনা। তারা আশা করছে এটা মানবজাতীর জন্য অনেক সুফল বয়ে আনবে।

This undated high-speed camera image provided by Jalila Essaidi shows a .22 caliber bullet hitting but not breaking the “bulletproof” skin created by Dutch artist Jalila Essaidi with the help of Utah State research Randy Lewis. Lewis supplied the silk threads from a genetically engineered silk worm that Essaidi weaved into a lattice of human skin cells to create a layer that was capable of repelling a bullet. Lewis believes his genetically engineered spider silk from worms and goats can be used to help surgeons heal large wounds and create artificial tendons and ligaments.(AP Photo/Jalila Essaida)

রেফারেন্স-
১. Wikipedia
২. Foxnews.com
৩. Newscientist.com

লেখক
সাজ্জাদ হোসেন ইমন
বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগ (লেভেল ৩, টার্ম ১)
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়