সৌরজগতের গ্রহগুলোর গতিবিধিঃ জোহানেস কেপলার

https://onedrive.live.com/redir?resid=941930DF70F60AAC!2860&authkey=!APaVdTIreMNFVzc&v=3&ithint=photo%2cjpeg

আদিম গুহাবাসী কৌতুহলী মানুষ রাতের আকাশ দেখে সম্মোখীত হয়েছে; আগ্রহী হয়েছে তাকে জানার।  প্লেটো,এরিষ্টটল, টলেমি, ইউডোলাক্স সহ বিভিন্ন গ্রিক দার্শনিকেরা কল্পনা করেছিলেন পৃথিবী-কেন্দ্রীক-স্থির মহাবিশ্বের, অর্থাৎ মহাবিশ্বের কেন্দ্র হিসেবে পৃথিবীকে ধারণা করেন, সব নক্ষত্র, গ্রহ-উপগ্রহগুলো পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ‘সমদ্রুতিতে বৃত্তাকার’  পথে  গতিশীল-ঘুরছে।

তাদের মডেলে মহাবিশ্ব ছিল সমকেন্দ্রিক ভিন্ন ভিন্ন ব্যাসার্ধের পর্যায়ক্রমিকভাবে অনেকগুলো গোলক ( ব্যাখার জন্য৫৫ টি পর্যন্ত গোলক কল্পনা করা হয়) , যার কেন্দ্রে রয়েছে স্থির পৃথিবী।

কিন্ত স্বাভাবিকভাবেই পৃথিবী-কেন্দ্রিক মহাবিশ্ব দ্বারা এই মহাবিশ্বকে ব্যাখা করা যাচ্ছিল না, বিভিন্ন অসংগতি ধরা দিচ্ছিল। কিন্ত তবুও এই মডেলই তাদের কাছে যথাযথ মনে হয়।

১৫১২ খীষ্ট্রাব্দে নিকোলাস কোপারনিকাস ছোট একটা রচনা লেখেন তার কাছের মানুষদের উদ্দেশ্যে, যেখানে প্রথম তিনি সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের প্রস্তাব করেন, আর পৃথিবী সৌরজগতের আরেকটি গ্রহ, যা সূর্যের চারদিকে ঘুরছে! সেসময় চার্চগুলো ধর্মীয় ধারণার বাহিরে কোনকিছু প্রচার হলে, তার বিরুদ্ধে নির্মম আচরণ করত।

উনি বাকিটা জীবন অতিবাহিত করেন তার এই মডেলের পিছনে বিভিন্ন গবেষণায়। তার সেই ছোট্ট রচনা দেখে উদ্ভূদ্ধ হন হিবটেনবার্গের শিক্ষার্থী- রেটিকাস। রেটিকাস বৃদ্ধ কোপারনিকাসের সাথে সাক্ষাত করলে, কোপারনিকাস তাকে দেখান তার সারা জীবনের গবেষণা নথিভুক্ত বই-টি। রেটিকাস উদ্দ্যোগী হন বই-টি প্রকাশের; তার অনুরোধে কোপারনিকাস রাজি হলে- ১৫৪৩ সালে “De Revolutionibus Orbium Coelestium” প্রকাশিত হয়।পরে কোপারনিকাসের এই ‘বিশ্বমডেল’ প্রচার করে বেরোবার জন্যে শাস্তিস্বরূপ জিয়োরদানো ব্রুনোকে রোমান ক্যাথলিক চার্চ তাকে পুড়িয়ে হত্যা করে। (যায় হোক সে আরেক কথা)

জোহানেস কেপলার- জার্মান গণিতবীদ, জোত্যির্বিজ্ঞানী। উনি ছিলেন প্রাগের(বর্ত্মান চেক-রিপালিকানের রাজধানী) এর রাজা রুডোলফের রাজগণিতবীদপর্ষবর্গের একজন- টাইকো ব্রাহের সহকারী। ব্রাহো মারা যাবার পর তার শিষ্য কেপলার অধিষ্টিত হন প্রধান রাজগণিতবীদ পদে।  তার সাথে সাথে পান- টাইকো ব্রাহের “পর্যবেক্ষণ বই”। উনি কোপারনিকাসের সৌরমডেলে আস্থা রাখেন।  তিনি টানা চার বছর আমাদের প্রতিবেশি গ্রহ- মংগলের গতির ওপর পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারেন- মংগল(ও পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহ) বৃত্তাকার নয়, বরং উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষীণ করছে।  বিদায় জানিয়ে দেন চিরায়ত বৃত্তাকার গতির ধারণা। আরো বুঝেন গ্রহগুলো সম গতিতে নয় বরং সূর্যের কাছাকাছি দ্রুত আর দূরে গেলে তুলনামূলক ধীরলয়ে চলে।

আরো সহজ করে, উনি এগুলোকে তার গতির প্রাপ্ত ফলাফলকে তিনটি গাণিতিক সূত্রে উপস্থাপন করেন।   এই সূত্রগুলো Kepler’s law for planetary motion নামে পরিচিত। সূত্রগুলো হচ্ছে-

১ ম সূত্রঃ  গ্রহগুলোর কক্ষপথ পরাবৃত্তীয়, এবং সূর্য উপবৃত্তের একটি কেন্দ্রে অবস্থিত। (উপবৃত্তে দুইটি কেন্দ্র থাকে)

চলবে…